রায়গঞ্জ ঐতিহ্যবাহী সিরাজগঞ্জ জেলার অন্যতম উপজেলা।এ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নানা ধরনের নিদর্শন। এ নিদর্শন গুলি এ উপজেলাকে লালন করে।তুলে ধরে এর গৌরব।উল্লেখযোগ্য ঐতিহ্য সমূহ নিম্নরুপঃ
জয়সাগর দীঘিঃরায়গঞ্জ উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়নের নিমগাছি ও গোতিথা দুই মৌজার মধ্যে জয়সাগর দীঘিটি অবস্থিত। নিমগাছি বাজার থেকে দীঘির দুরত্ব পশ্চিম দিকে প্রায় ৫০০মিঃ। আয়তন প্রায় ৫৮ একর। জনশ্রূতি আছে বিরাট রাজার আমলে প্রজাদের জনকষ্ট নিবারণের নিমিত্তে এবং রাজার কয়েক লক্ষ গরু ও পানীয় জলের জন্য এই দীঘি খনন করা হয়।ঐতিহাসিকদের মতে পাল সাম্রাজ্যে দ্বিতীয় গোপাল ( ৯৪০-৯৬০ খ্রীঃ) রাজ্য শাসন করেন। এই দীঘিটি ওই সময় খনন করা হয়েছে বলে জানা যায়। বর্তমানে জয়সাগর দিঘী ফিশারী অফিসের আওতায় সুফলভোগীদের দ্বারা মাছ চাষ করছে।সিরাজগঞ্জ শহর হতে ভূইয়াগাঁতী হয়ে নিমগাছী বাজারে আসতে হবে। বাজারের ৫০০ মিটার পশ্চিমে জয়সাগর দিঘী অবস্থিত। যাতায়াত ব্যবস্থা= বাস, কার, মোটর সাইকেল, রিকশা ইত্যাদি।
ভোলা দেওয়ানের মাজারঃউপজেলায় যে কয়টি পুরাতন মাজার রয়েছে তার মধ্য ভোলা দেওয়ানের মাজারঅন্যতম। নিমগাছী বাজারের পশ্চিম পাশে অবস্থিত।উপজেলা সদর হতে ১২কি. মি. দূরে সোনাখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের দক্ষিন পাশে এ মহান ব্যাক্তির মাজার। তাঁর মাজারের পার্শ্বে রয়েছে একটি মসজিদ। এলাকায় তার অনেক অনুসারী রয়েছে।
ধুবিল কাটারমহল জমিদার বাড়ীঃউপজেলা সদর হতে প্রায় ২০ কি. মি. দূরে ধুবিল ইউনিয়ন পরিষদঅবস্থিত। ইউনিয়ন পরিষদের দক্ষিন দিকে এ কাটার মহম জমিদার বাড়িটিঅবস্থিত। কাটার মহল পরগনার প্রতিষ্ঠাতা জমিদার মুন্সি আব্দুর রহমানতালুকদার এর আমলে এ বাড়িটি নির্মিত হয়েছে বলে জানা যায়। এ বাড়িটিরকারুকাজ খুব সুন্দর যা সেকালের নির্দশনের বাহন হিসাবে আজও দাঁড়িয়ে আছেআমাদের সামনে।
আটঘরিয়া জমিদার বাড়ীঃউপজেলা সদর হতে প্রায় ৭ কিঃমিঃ দক্ষিণে আটঘরিয়া গ্রামে সপ্তদশ শতাব্দীতে জমিদার উৎসব নারায়ণ চক্রচর্তী কর্তৃক এই ভবনটি নির্মিত হয়েছে বলে জানা যায়।
মকিমপুর জমিদার বাড়ীর মন্দিরঃরায়গঞ্জ উপজেলা সদর হতে উত্তরদিকে প্রায় ২ কিঃমিঃ দূরে পৌরসভার আওতাধীন মকিমপুর গ্রামে এই মন্দিরটি অবস্থিত।মন্দিরটি অত্যন্ত প্রাচীন।
রায়গঞ্জ সান্যাল জমিদার বাড়ীর শিব দুর্গা মন্দিরঃরায়গঞ্জ উপজেলা সদর থেকে রায়গঞ্জ পশু হাসপাতাল প্রায় ৩.৫ কিঃমিঃ দূরে অবস্থিত। এই পশু হাসপাতালের পশ্চিম পার্শ্বে কাচা রাস্তায় মাত্র ৩/৪ দূরে এটি অবস্থিত। প্রায় তিনশ বছর আঘে এই মন্দিরটি নির্মিত হয় বলে জানা যায়।এটি ধানগড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত।
তাঁত শিল্পঃবাংলাদেশেরতাঁত শিল্পের ঐতিহ্য অনেক পুরনো। এককালে এ দেশের তাঁতে তৈরি মসলিন সারাবিশ্বে সমাদৃত ছিল। কালের আবর্তে মসলিনের বিলুপ্তি ঘটলেও বর্তমানেহস্তচালিত তাঁতে তৈরি জামদানি, বেনারসি ও টাঙ্গাইল শাড়ি মসলিনেরই ধারক ওবাহক।যে কয়টি জেলা এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছেতার মধ্যে সিরাজগঞ্জ অন্যতম। সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার প্রায়প্রতিটি গ্রামে এ শিল্প ছড়িয়ে রয়েছে।এ উপজেলায় তাঁতিদের বয়নপূর্ব ও বয়নোত্তর সেবা যেমন সুতা ও কাপড়ের রংকরণ, মার্সারাইজিং, ক্যালেন্ডারিং এবং স্টেনটারিং করা হয়।
গ্রামেগঞ্জে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তাঁতিরা তাঁদের হস্তচালিত তাঁতে মান্ধাতাআমলের ডিজাইনে তাঁতবস্ত্র তৈরি করে আসছেন।তাঁতশিল্প এ উপজেলার গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকারপালন করে, যা সরকার ঘোষিত ভিশন ২০২১-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ পেশায় প্রায় ২৫ হাজার মানুষ জড়িত।
উপজেলারঐতিহাসিক সলঙ্গায় রয়েছে বিরাট হাট।এছাড়া সোনাখাড়া, নিমগাছী,চান্দাইকোনা, ধানগড়া, ধুবিলসহ অনেক স্থানে মাঝে মাঝে পুথি গান, পালা গানইত্যাদি লৌকিক গানের আসর বসে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস